banner

Sunday 3 May 2015

আমি কেবল আমি, আমিই আমার ব্র্যান্ড

আমি পৃথিবীর মানুষদের প্রতি বেশ কৃতজ্ঞ। তারাই এই শক্তিশালি সভ্যতা নির্মাণ করেছে এবং সমাজ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলিত করে রেখেছে। জন্মের পর থেকেই তারা আমাকে পৃথিবীতে টিকে থাকার নিয়ম-কানুন শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে। তবে সত্যিকার অর্থে পৃথিবীতে টিকে থাকা বা বেঁচে থাকার নিয়ম-কানুন শেখার ব্যাপারে আমি সব সময়ই উদাসীন। অবাক হয়েছি যখন মানুষেরা আমার ভুল ধরতে শুরু করেছে, আমার যোগ্যতা (ability) মাপার ব্যবস্থা করেছে, আমার ভাল-মন্দ অনেক গুনাগুণ আরোপ করেছে। হ্যা, পৃথিবীতে পদে পদে আমাকে যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে হয়েছে। মানুষেরা এত সুন্দর করেই না পরিমাপ করে দেখিয়েছে আমি কত অযোগ্য! তারা আমার অভাব এবং ভুলগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। না, আমি তাদের প্রতি অকৃতজ্ঞ নই। তবু, অবাক হয়েছি কিছু অতিরিক্ত মহৎ লোকদের দেখে, যারা আমার শারীরিক অক্ষমতা, সৌন্দর্যহীনতা, বা বুদ্ধিমত্তার অভাব দেখে আফসোস করেছে, করুণার চোখে তাকিয়েছে, আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে আমি কতই না হতভাগ্য।

একটি চরম দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে আমি তাদের সব কথা মেনে নিয়েছিলাম। আর সেজন্যই আমি নিজেকে মেনে নিতে পারি নি। আমি আফসোস করেছি, আমি কেন এমন হলাম? আমাকে এইরকম হতে হবে বা ওইরকম হওয়া উচিৎ ছিল। চেষ্টাও করেছি অনেক অন্যদের মত হতে। সভ্যতার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চেষ্টা তো করতেই হবে। ব্যক্তিত্ববান, স্মার্ট বা যোগ্য হওয়ার চেষ্টাও অনেক হয়েছে।

না, এই অনুকরণের প্রতিযোগিতায় আমি ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। পৃথিবীর এই নিয়ম-কানুন প্রতিযোগিতা ঝেড়ে ফেলে আমি আরো বেশি উদাসীন হয়ে যেতে চাই। আমি তো কারখানার ছাঁচে তৈরি পন্য নই যে আমিও অন্যদের মত হতে বাধ্য। এই সংক্ষিপ্ত পৃথিবী ভ্রমণটা কেবলমাত্র আমার জন্য উপহার। মাতৃগর্ভ থেকে আমি একা এসেছি, যাওয়ার সময়ও একাই যাব। আমি তাই ইউনিক, পৃথিবীর কারো সাথে মিল থাকাটা তাই ভিত্তিহীন।

এখন আর কোনকিছু নিয়ে কোন আফসোস নেই। কোন ব্যর্থতা, দুর্বলতা, অক্ষমতা বলেও আসলে কিছুই নেই। সত্যিকার অর্থে জীবনের কোন পরীক্ষার কোন ফল নিয়েও আমার কোন আফসোস নেই। আমার যোগ্যতা-অযোগ্যতা পরিমাপের যোগ্যতাও কারো হাতে নেই। অন্য কোন মানুষের মতও হতে চাই না। আমি সারা জীবন ধরে কেবল আমিই হতে চাই; আমি কেবল আমিই হব। আমিই আমার ব্র্যান্ড। আমি যেটা করি সেটাই নিয়ম, আমার যা অর্জন সেটাই সাফল্য, আমি যা তাই ব্যক্তিত্ব (personality), আমি যেভাবে চলি সেটাই স্মার্টনেস।

Monday 27 April 2015

ভুমিকম্পে আহত, নিহত এবং সমস্ত ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি সমবেদনা


আমার একটি গভীর পর্যবেক্ষণ হল মানুষের সব চেয়ে প্রিয় জিনিস হচ্ছে জমি বা ভুমি। আমাদের দেশে জমি দখল এর জন্য প্রতি বছর অনেক মারপিট হয়। এই প্রিয় ভূমি দখল এর জন্য বাঙালিরা বছরের পর বছর গ্রামে গ্রামে লড়াই চালিয়ে অনেকেই প্রাণ হারান। এ থেকে প্রমাণ হয় অনেকের কাছেই নিজের জীবনের চেয়ে ভূমির মুল্য বেশি। টাকার অঙ্কেও এটা আসলেই হীরার চেয়ে দামী। এতই দামী যে সামান্য কয়েক ইঞ্চি জমি দখলের জন্য সারাজীবন প্রতিবেশীদের সাথে ঝগড়া করা যায়। এটা যে শুধু ব্যক্তি মানুষের ক্ষেত্রে সত্যি তাই নয় সামগ্রিকভাবেই সত্য। এজন্যেই ভারত এত বড় দেশ হওয়া সত্বেও আমাদের ছিটমহলগুলো চির দখল করে রেখেছে, তারকাটা দিয়ে কঠিন সীমানা প্রাচীর বানিয়ে রেখেছে। এটা অস্বাভাবিক কিছুই না। মানুষের দখলের এই কারণ হল শক্তি, যার শক্তি থাকবে সে দখল দিবে।এটাই সারা পৃথিবীতে মানুষের বেঁধে দেওয়া নিয়ম।
কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে সবই প্রকৃতির, এবং তাতে প্রকৃতির সবার অধিকার থাকার কথা। আমরা মানুষরা অতি স্বার্থপর বলেই এতো, কাড়াকাড়ি এতো ভাগাভাগি। মানুষ যদি মানুষ হত তবে সারা পৃথিবীটাই এক দেশ হত; সমস্ত পৃথিবীটাই হত একটি আবাসস্থল। স্বাভাবিক অবস্থায় আমরা এই সত্যটা মেনে নিতে পারব না। কারণ দখল করার এই শক্তিকে অগ্রাহ্য করা যায় না। কিন্তু প্রকৃতি তো আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালি। সে মাঝে মাঝেই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে প্রমাণ করে দেয় আমরা এই পৃথিবীর মালিক নই। হ্যা, এই পৃথিবীতে কারো কোন অধিকার নেই, অথবা সবারই রয়েছে অধিকার। আচ্ছা, মানুষের কি ভেবে দেখা উচিৎ না যে সে জন্মের সময় কিছুই নিয়ে আসে নি? আবার মৃত্যুর পরেও কি কিছু নিয়ে যেতে পারবে? তবে সে সম্পদের মালিক কিভাবে হল?

নেপালে ভুমিকম্পে আহত, নিহত এবং সমস্ত ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি সমবেদনা। 

Saturday 25 April 2015

অভিমানী


অভিনয় করেছ যদিও তবুও রব চির ঋণী
ভালবাসা হই নি তবুও হয়েছি তো অভিমানী।
অনুরাগে ডাক নি কাছে, অনুরোধে কর নি ইশারা
তবু থাকো তুমি বহুদূরে থাকো চির অধঃরা।
কিছুই পাব না জানি, হবে না আমার জানি-
হই নি আপন, তবুও হয়েছি তো অভিমানী।

তবুও তো সব ভালবাসা দিয়েছি তোমায়
যদিও বা বুঝেও তুমি তার বোঝ নি কিছুই
তবুও সে ভালবাসা যায় নি  যেন বৃথাই
ভালবাসা না পাই, ঘৃনায়তো হৃদয়ে পেয়েছি ঠাই।
র’ব সে ঘৃনায় তবুও র’ব চির ঋণী
ভালবাসা হই নি তবুও হয়েছি তো অভিমানী।

তুমি তো সেই আমার তুমি এখনো যে তেমনি
তোমার দেয়া অবহেলায় হয়ে গেছি অভিমানী
তবু তো সে অবহেলা তোমারই যে উপহার
হাজার বছর সইব আরও তোমার দেওয়া ব্যাথা-ভার।
র’ব সে ব্যাথায় তবুও র’ব চির ঋণী   
ভালবাসা হই নি তবুও হয়েছি তো অভিমানী।
 25 April, 2015 @S.M. Hall, DU. 

Wednesday 22 April 2015

কাঁদো নদী কাঁদো



বুকের মাঝে ঘোলা জল নদী হয়ে আসমুদ্র সাঁৎরায়
পিপাসার্থ পথিকের কাছে  আসি অবিরাম-
এ নদী জল ফুরায় না, পিপাসা ফুরিয়ে যায়।

না, এ নদী বহুকাল ধরে শুকায় না
শুধু সে চলে গেছে বহু দূরের নগরী,
অন্য কাউকে ভালবেসেছে সে
যার সমুদ্রে ভেসে চলে প্রমোদ তরী।
নোনা জল বুকে নিয়ে তবু নদীরা কাঁদে
কাঁদো নদী কাঁদো-   
পৃথিবীর সব নদী আজ জলে থই থই
শুধু তুমি কাঁদ না, তোমার চোখে জল নেই।